ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি
ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি

ঢেঁড়স চাষ পদ্ধতি

মাটি ও জলবায়ু

ঢেঁড়স সব মাটিতে  চাষাবাদ করা যায়। তবে দো-আঁশ ও বেলে দো-আঁশ মাটিতে ঢেঁড়স ভালো উৎপাদন হয়। এঁটেল মাটিতে চাষ করা যায় যদি  পানি নিষ্কাশনের সুবিধা থাকে। প্রচুর পরিমাণে জৈব্সার ব্যবহার করলে বেলে মাটিতেও ঢেঁড়স চাষ করা সম্ভব। ঢেঁড়স শুস্ক ও আর্দ্র আবহাওয়ায় ভালো জন্মে।

 জমি তৈরি

ঢেঁড়স চাষ করার জন্য গভীরভাবে ৫-৬টি চাষ ও মই দিয়ে মাটি ভালোভাবে ঝুরঝুরে করে নিতে হবে। ঢেলা থাকলে ভেঙ্গে দিতে হবেও জমির আগাছা পরিস্কার করে নিতে হবে। জমি রেডি করে ১ মিটার করে বেড করতে হবে। দুটি বেডের মাঝে ৩০ সেঃ মিঃ চওড়া নালা হবে। একটি বেডে ২ টি সারি হবে। সারি হতে সারি ৬০ সেঃ মিঃ, সারিতে ৪০/৪৫ সেঃ মিঃ পর পর ২ টি করে বীজ বপন করতে হবে, একটি চারা থাকবে।

জাত পরিচিতি

বারি ১ জাত টিতে ভাল ফলন হয়, এটি উচ্চ ফলনশীল জাত। এই জাতের  নেই কোন হলুদ শিরা বা ভাইরাস রোগ। এই জাতটি অনেক দিন পর্যন্ত ফল দেয়। বাড়ি ১ জাতটির বীজ বপনের ৪৫ দিন বয়সের মধ্যে ফুল ফুটতে শুরু করে। ফুল ফোটার ৫-৬ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করতে হয়। প্রতিটি গাছে ২৫-৩০ টি ফল হয়ে থাকে।

বাড়ি ২ জাত এটিও উচ্চ ফলনশীল আগাম জাত। বীজ বপনের ৪০-৪২ দিন বয়সের মধ্যে ফুল ফুটতে শুরু করে। ফুল ফোটার ৫-৬ দিনের মধ্যে ফল সংগ্রহ করতে হয়। প্রতিটি গাছে ৩২-৩৮ টি ফল হয়ে থাকে।

উপরোক্ত দুটি জাত ছাড়াও পুশা,জাপানী, শ্রাবণী, শাউনি, সাওয়ানী সহ ইত্যাদি জাত চাষ করা হচ্ছে।

বীজ বপনের সময়

ফাল্গুন থেকে বৈশাখ মাসে বীজ বপনের সঠিক সময়।

খরিপ ১ মৌসুম: জানুয়ারির মাঝামাঝি থেকে মার্চ মাসের মাঝামাঝি সময়।

খরিপ ২ মৌসুম: মার্চ মাসের মাঝামাঝি থেকে মে মাসের মাঝামাঝি সময়।

রবি মৌসুম: আগষ্ট মাসের মাঝামাঝি থেকে সেপ্টেম্বর মাসের মাঝামাঝি সময়।

তবে এখন অনেক ভাল বীজ কোম্পানি হাইব্রিড জাত এর বীজ ব্রিক্রি করে যা ১২ মাস চাষাবাদ করা যায়।

বীজের পরিমাণ

শতক প্রতি ৩০/৩৫ গ্রাম বীজ প্রয়োজন হয়ে থাকে।

শতক প্রতি সার প্রয়োগ

ভালো ফলন পেতে হলে প্রতি শতাংশে যে হারে সার প্রয়োগ করতে হবে। গোবর ৫০ কেজি / টি এস পি ৪০০ গ্রাম / ইউরিয়া ৬০০ গ্রাম / পটাস ৬০০ গ্রাম / জিপ সাম ৪০০ / জিংক সালফেট ৪০ গ্রাম / বোরন ৪০ গ্রাম।

শেষ চাষে সার প্রয়োগ

অধেক পটাস এবং ইউরিয়া সার বাদে সব ছিটিয়ে আরো একটি চাষ দিয়ে জমিতে মই টেনে মাটি সমান করে বেড করতে হবে। বাকি ইউরিয়া + পটাস সার সমান ৩ টি কিস্তিতে যথাক্রমে ৩০,৪৫ ও ৬০ দিন পর পর উপরি প্রয়োগ করতে হবে। নিয়মিত সেচ এবং নিড়ানী দিতে হবে।

ঢেঁড়স গাছের পরিচর্যা

গাছের ব্রদ্ধির সময় নিয়মিত নিড়ানি দিয়ে আগাছা পরিস্কার করেদিতে হয়। মাটির ইপরিভাগ মাঝে মাঝে আলগা করতে হবে। জমিতে পানি সেচ দেওয়ার পর মাটিতে জো আসলে মাটির চটা ভেঙ্গে দিতে হবে। এত করে মাটিতে আলো বাতাস ঢুকবে এবং মাটিতে অনেক দিন রস থাকে। আগাম জাতের ঢেঁড়মের জন্য পানি সেচ দেওয়ার প্রেয়োজন হতে পারে। ১০-১২ দিন পরপর সেচ দিতে হয় । বর্ষা কালের জন্য পানি নিষ্কাশনের সুব্যবস্থা থাকতে হবে।

রোগবালাই

হলুদ শিরা বা মোজাইক ভাইরাস রোগ প্রধান। জেসিড এবং সাদা মাছি পোকা দমন করতে হবে। নিয়মিত জমি পরিদর্শন করে রোগবালাই ও পোকামাকড়ের প্রতিকার ব্রবস্থা গ্রহন করতে হবে।

Similar Posts

X
%d bloggers like this: