বিড়াল পালন
বিড়াল পালন

বিড়াল পালন

একটি বিড়াল সঠিক ভাবে পালনের জন্য আগে কিছু জরুরি জিনিস সম্পর্কে ধারণা থাকা টা খুব জরুরি তা উল্লেখ করা হলো :
১.বিড়াল সাধারণত স্বভাব গত দিক দিয়ে স্বাধীন হলেও বিড়ালের ও অনেক যত্নের প্রয়োজন হয়ে থাকে। তাই আপনি যদি বিড়াল পালন করেন তাহলে আপনি যত ব্যাস্ততায় থাকেন না কেন সারাদিন তার পর ও বিড়ালের জন্য আপনাকে প্রতিদিন কিছু সময় আপনাকে ব্যয় করতে হবে।আর এই জন্য অবশ্যই বিড়াল পালার আগে অবশ্যই আপনাকে ভেবে চিনতে ঠিক করতে হবে আপনি কি তাদের জন্য প্রতিদিন কিছু সময় বাহির করতে পারবেন কিনা এবং তাদের সময় দিতেও পারবেন কিনা। যদি এমন তা করতে পারেন তাহলে বিড়াল পালন করুন। আর যদি আপনি জানেন যে সময় দিতে পারবেন না তাহলে বিড়াল আপনার না পালন করাই ভালো।
২.আমরা শখের কারণে বিড়াল পেলে থাকি। তবে বিড়ালের জন্য অনেকের এলার্জি হয়ে থাকে।আর এতে আপনি এতে শারীরিক ভাবে অসুস্থ হতে পারেন।তাই অবশ্যই বিড়াল পালন করার আগে অবশ্যই পরীক্ষা করে দেখবেন যে আপনার বিড়ালে এলার্জি আছে কিনা। যদি এলার্জি না থাকে তাহলে পালন শুরু করতে পারেন।আর যদি এলার্জি থাকে তাহলে আপনার বিড়াল পালন না করাই ভালো। তার কারণ এতে আপনার ও বিড়াল উভয়ই ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।তাই অবশ্যই বিষয় তা যাচাই করে বিড়াল পালন করুন।
৩.আপনি বিড়াল পালন করার আগে অবশ্যই ভালো ভাবে খোঁজ খবর নিয়ে দেখবেন আপনাদের পরিবারের সবাই কি বিড়াল পছন্দ করে কিনা। এবং আপনি যে বিড়াল পালতে চাচ্ছেন তাতে কি তাদের সম্মতি আছে কিনা। যদি সম্মতি থাকে তাহলে বিড়াল পালন শুরু করে দিতে পারেন। আর যদি আপনার পরিবারের কোনো একজন যদি বিড়াল পছন্দ না করে তাহলে আপনি বিড়াল না পালা তাই ভালো। কারণ এতে কিছু দিন পর অনেক সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে।
৪.আপনি বিড়াল পালন করার আগে অবশ্যই আপনার ঘরবাড়ি কি বিড়ালের জন্য উপযুক্ত কিনা তা অবশ্যই ভালো ভাবে যাচাই করে দেখবেন।বিড়াল সাধারণ একেক জন একেক ভাবে পালন করে। যারা নিচতলায় থাকে তারা খোলামেলাভাবে ভাবেই ঘরবাড়িতে বিড়াল পালন করে থাকে। আর যদি বাসা উপরের তালায় হয় তাহলে অবশ্যই বারান্দা/জানালায় জাল লাগিয়ে রাখতে হবে। যাতে কখনো বিড়াল বারান্দা/জানালায় দিয়ে পড়ে গিয়ে ব্যাথা না পায়। তাই বিড়াল পালনের আগে এই বিষয় গুলো ভেবে রাখতে হবে। তাহলে আপনি বিড়াল পালন করতে পারেন।
৫.আপনি যদি ঘরে বিড়াল পালন করেন তাহলে বিড়ালকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে টয়লেট করানোর অভ্যাস করতে পারেন। এতে বিড়াল ওই খানেই সব সময় টয়লেট করবে। আর এই অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য ঘরের কোনো এক জায়গায় লিটার বাক্স এর ব্যবস্থা করতে পারেন যাতে বিড়াল টয়লেট করবে। আর এই লিটার বাক্স টি প্রতিদিন পরিষ্কার করতে হবে। লিটার বাক্স তৈরী করতে প্রয়োজন হয় একটি গামলায় অথবা লিটার বাক্স এর ভেতরে বালি, কাগজের টুকরা অথবা litter (কিনতে পাওয়া যায়) দিয়ে সহজে বানিয়ে একটা নির্দিষ্ট স্থানে দিয়ে রাখুন এবং সেই জায়গায় বিড়াল কে টয়লেট করার জন্য অভ্যাস গড়ে তুলুন। তাহলে আপনি সহজেই বিড়াল পালন করতে পারবেন।
৬.আপনি যদি ঘরে বিড়াল পালন করেন তাহলে বিড়ালকে চারমাস বয়সে অবশ্যই পশু চিকিৎসকের দ্বারা Spay/ Neuter করে নিতে হবে।এইটা করলে সব থেকে বড়ো সুবিধা হচ্ছে Spay/ Neuter করলে বিড়াল আর বাচ্চা দিতে পারে না। আর আপনি যদি Spay/ Neuter না করান তাহলে কিছুদিন পর পর যখন বিড়াল হিট এ আসবে তখন বিড়াল অস্বাভাবিক আচরণ করা শুরু করবে।আর তাই Spay/ নেউটের নির্দিষ্ট সময়ে করিয়ে নেয়া ভালো। এতে বিড়ালের সংখ্যা ও নিয়ন্ত্রনে থাকবে।
৭.আপনি যদি ঘরে বিড়াল পালন করেন তাহলে বিড়াল কে প্রতিদিন সঠিক পরিমানে খাবার ও পানি সরবরাহ করতে হবে। বিড়াল যদি এক মাসের ছোট হয় তাহলে সেই বিড়াল কে লিকুইড খাবার দিতে হবে এবং বিড়াল যদি ১ মাসের বেশি বয়সের হয় তাহলে সেদ্ধ করা মাছ, মাংস(মসলা ছাড়া) ভাতের সাথে মিশিয়ে খেতে দিতে হবে। আর তা ছাড়া বাজারে বিড়ালের অনেক খাবার পাওয়া বিভিন্ন ব্যান্ডের। আর এই খাবার বিড়ালের কাছে অনেক জনপ্রিয়। বিড়াল সেই খাবার অনেক বেশি পছন্দ করে।
৮.আপনি যদি ঘরে বিড়াল পালন করেন তাহলে আপনাকে তার খেলাধুলা করাকে মেনে নিতে হবে এবং বিড়ালকে পর্যাপ্ত খেলনা দিতে হবে এবং তাকে ভালো ভাবে খেলাধুলার ব্যবস্থা করে দিতে হবে।কারণ বিড়াল খেলাধুলা করতে অনেক বেশি ভালোবাসে।আর বাড়িতে যদি অন্য কোনো কুকুর বিড়াল থাকে তাহলে বিড়াল প্রথমে তাদের ভয় পাবে তবে ৩/৪ দিন পর তারা বন্ধু হয়ে যাবে এবং এক সাথে খেলাধূলা করবে।তাই এই বিষয়ে ভয় পাবার কিছু নেই।
৯.আপনি যদি ঘরে বিড়াল পালন করেন তাহলে অবশ্যই বিড়ালের যাতে রোগ না হয় সেই দিকে অনেক খেয়াল রাখতে হবে এবং আর বিড়ালের রোগ যেন মানুষের না হয় সে জন্য পশু চিকিৎসকের দ্বারা নিয়মিত বিড়াল check-up করানো উচিত এবং বিড়ালের বিভিন্ন রোগের টিকা সময়মতো দিলে আর তেমন কোনো ভয় থাকে না এই বিষয় গুলো নিয়ে। তাই টিকা গুলো দিয়ে দেওয়া খুব জরুরি।
১০.বিড়াল সাধারণত নতুন স্থানের নতুন পরিবেশের সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে একটু সময় নিয়ে থাকে।নতুন স্থানের নতুন পরিবেশে আসলে সাধারণত বিড়াল রাতে জেগে থাকে, না খেয়ে থাকা, না ঘুমানো, কান্নাকাটি করা, বাইরে চলে যেতে চাওয়া ইত্যাদি বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয়।তাই এই বিষয়ে ভয় পাওয়ার কিছু নেই। কিছু দিন এর মধ্যেই ঠিক হয়ে যায়। বিশেষ করে অনেক গুলো বিড়ালের মধ্যে থেকে বিড়াল আনলে বিড়াল নিজেকে অনেক বেশি একাকীত্ব অনুভব করা তাই তারা এমন আচরণ করে থাকে। কিন্তু সকল কিছু ১০-১৫ মধ্যে একাই ঠিক হয়ে যায়। তাই এমন কিছু হলে কিছু দিন অপেক্ষা করুন।তাহলে দেখবেন কিছুদিনের মধ্যে বিড়াল আপনার প্রকৃত বন্ধু হয়ে উঠবে।
X
%d bloggers like this: